Author Topic: রক্তে ৩ ধরনের কোলেস্টেরল বৃদ্ধির কারণ, ঝুঁকি ও নিয়ন্ত্রণ নিয়ে জানেন?  (Read 1046 times)

0 Members and 2 Guests are viewing this topic.

LamiyaJannat

  • Guest
কোলেস্টেরল সম্পর্কে আমাদের সবারই কম বেশি ধারণা আছে। কিন্তু সঠিক ও  স্বচ্ছ  ধারনা অনেকেরই নেই। অনেকেই মনে করেন যারা বেশি স্বাস্থ্যবান, বেশি খাওয়া-দাওয়া করেন তাদেরই কোলেস্টেরল সমস্যা হতে পারে । কিন্তু বাস্তবে এমন অনেক মানুষ আছে যারা খুব বেশি স্বাস্থ্যবান না হওয়া সত্ত্বেও কোলেস্টেরল সমস্যায় ভুগছেন। তাই, আসুন জেনে নিই আমাদের রক্তে ৩ ধরনের কোলেস্টেরল বৃদ্ধি সম্পর্কে বিস্তারিত-
রক্তে ৩ ধরনের কোলেস্টেরল
কোলেস্টেরল হল হাইড্রকার্বন কোলেস্টেন থেকে উৎপন্ন যৌগ। মানুষের রক্তে ৩ ধরনের কোলেস্টেরল থাকতে পারে।
১) এলডিতএল(LDL- low density lipo protein)
২) এইচডিএল (HDL-high density lipo protein)
৩) ট্রাইগ্লিসারাইড।
১) এলডিএল
রক্তে এলডিএল  এর মাত্রা বেড়ে গেলেই মূলত সেটাকে কোলেস্টেরল সমস্যা ধরা হয় । পূর্ণ বয়স্ক মানুষের রক্তে ১.৬৮-১.৪৩ গ্রাম/ডেসি লিটার এলডিএল থাকে।
২) এইচডিএল
এইচডিএল আমাদের দেহকে সুস্থ রাখে, শারীরিক বৃদ্ধি ঘটায় । আমাদের রক্তে .৯০-১.৬০ গ্রাম / ডেসি লিটার  এইচডিএল থাকে। সহজ ভাষায় বলা যায়,  এইচডিএল আমাদের বন্ধুর মত ।
৩) ট্রাইগ্লিসারাইড
আমাদের শরীরে মেদ / চর্বি হিসেবে যা জমে তা-ই  ট্রাইগ্লিসারাইড। তাই যারা মোটা হয়ে যাচ্ছেন তাদের রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইড বেড়ে যাচ্ছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
কাদের কোলেস্টেরল বেশি হয়?
কোলেস্টেরল সমস্যা যেকোনও বয়সেই হতে পারে। কিন্তু আপনার বয়স যদি ৩৫/তার বেশি হয় আপনি সহজেই কোলেস্টেরল সমস্যায় পড়তে পারেন । আমাদের দেশে মহিলাদের চেয়ে পুরুষদের কোলেস্টেরল এর ঝুঁকি বেশি। যারা বসে বসে কাজ করেন সারাদিন তারা বেশি আক্রান্ত হতে পারেন।
কোলেস্টেরল বৃদ্ধির কারণ কী?
১. ফাস্ট-ফুড বেশি খাওয়া।
২. রেড মিট , চিংড়ি মাছ , চকলেট বেশি খেলে।
৩. আমাদের গৃহীত খাদ্য পরিশ্রমে ব্যয় না হলে, অতিরিক্ত খাবার দেহে ফ্যাট হিসেবে জমা হয় । ফলে কোলেস্টেরল বেড়ে যায়।
৪. খাবার পরপরই ঘুমালে।
৫. তৈলাক্ত খাবার বেশি খেলে।
৬. শারীরিক পরিশ্রম (যেমন, হাঁটা) কম করলে  ইত্যাদি।
কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে কিভাবে বুঝবেন?
১. অল্প পরিশ্রমেই ঘেমে যাওয়া ও হাঁপিয়ে ওঠা ।
২. মাথা ও ঘাড়ে ব্যথা ।
৩. বুক ধরফর করা ।
৪. দুর্বল বোধ করা ।
৫. দেহের ওজন ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকা ইত্যাদি।
উচ্চ মাত্রার কোলেস্টেরল ঝুঁকি
উচ্চ মাত্রার কোলেস্টেরল ধমনীর রক্ত প্রবাহে বাঁধা সৃষ্টি করে, ফলে হার্ট এ ব্লক ধরা পড়তে পারে। এমনকি মস্তিষ্কের ধমনী ছিরে  গিয়ে তৎক্ষণাৎ মৃত্যু ঘটাতে পারে । মেদ জমার কারণে যকৃত বড় হয়ে যেতে থাকে । পিত্তথলিতে কোলেস্টেরল জমে পিত্তথলির পাথর সৃষ্টি হতে পারে । কিডনিতে প্রদাহ হতে পারে। স্বাভাবিক বিপাকীয় কাজ ব্যাহত হতে পারে।
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ ও সুস্থ জীবন
১. ব্যালেন্স ডায়েট
প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ভাত না খাওয়া। গরুর মাংস একেবারেই কম পরিমাণে খাওয়া । মোট কথা সবকিছু পরিমিত পরিমাণে খাওয়া।
২. শারীরিক পরিশ্রম
অতিরিক্ত না ঘুমানো। হাঁটার অভ্যাস করা। বসে বসে কাজ করলেও আমরা শুধু পা নাড়িয়েই অতিরিক্ত ফ্যাট কিছুটা হলেও কমাতে পারি।
৩. ফাস্ট ফুড জাতীয় খাবার পরিহার করা । পেস্ত্রি, চকলেট জাতীয় খাবার কম খাওয়া।
৪. চিনাবাদাম, সামুদ্রিক মাছ ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার বেশি বেশি খাওয়া।
৫. রাতের খাবার ঘুমানোর বেশ কিছুক্ষণ আগে খেলে ভালো।
এসব কথা আমরা প্রায় সবাই জানি । কিন্তু জানলেও মানতে চাইনা । তাই কোলেস্টেরল এর ঝুঁকি কমাতে আপনার লাইফস্টাইল ও খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনুন । কেননা আমাদের সুস্বাস্থ্য, আমদের সুন্দর ও গোছানো  লাইফস্টাইল এর উপর অনেকাংশেই নির্ভরশীল ।