Binge Eating Disorder হলো এক ধরনের মনস্তাত্ত্বিক খাদ্যভাসের পরিবর্তন সম্পর্কিত সমস্যা। এর আগে আমরা আরও একটি Eating Disorder নিয়ে লিখেছিলাম । Binge Eating Disorder এ ক্ষেত্রে স্বাভাবিক অবস্থার চেয়ে বেশি খাবার গ্রহণ করার পরেও পেট ভরে না। আমরা যখন খাওয়া শুরু করি তখন ২০ মিনিট পরে আমাদের মস্তিষ্ক আমাদের কে সিগন্যাল দেয় খাবার বন্ধ করার জন্য। তখন আমরা টের পাই যে আমাদের পেট ভরে গিয়েছে। কিন্তু Binge Eating Disorder এর ক্ষেত্রে আমাদের এই মস্তিষ্ক সঠিক ভাবে কোনো সিগন্যাল প্রদান করে না। ফলে এই ক্ষেত্রে রোগী প্রচুর পরিমাণে খেতে থাকে এবং ধীরে ধীরে মোটা হতে থাকে। এই সময় রোগীরা প্রথমে খাবার প্রশান্তি সহকারে গ্রহণ করে এবং পরে দ্রুত খাদ্য গ্রহণ করে এবং এতে তাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকে না। এটি সাধারণত ওবেজ মহিলাদের মাঝে বেশি দেখা দেয়। কিন্তু স্বাভাবিক স্বাস্থ্যের মানুষেরও এ রোগ হতে পারে।
লক্ষণঃBinge Eating Disorder যে লক্ষণ গুলো দেখা দেয়,তা হলঃ-
1. এই Disorder এ আক্রান্ত ব্যক্তি দ্রুততার সাথে প্রচুর পরিমাণে খাদ্য গ্রহণ করে থাকে।
2. ৩ বেলা খাবার পর পরেই সে যে কোনো খাবার গ্রহণ করতে পারে
3. যে কোনো প্রকার আবেগের কারণে বেশি খাবার খায়
4. পেট ব্যথা বা বমির উদ্রেক না হওয়া পর্যন্ত খেতে পারে
5. সারাদিনই কিছু না কিছু খাবার জন্য ছোক ছোক করতে থাকে।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ কারণে এ সমস্যা দেখা দিতে পারে।1. বংশগত কারণে হতে পারে
2. অতিরিক্ত ডিপ্রেশন, চিন্তা বা একাকীত্ব থেকে হতে পারে
3. বাচ্চাদের জোড় করে খাওয়ালে অনেক সময় তা স্থায়ী হয়ে যায়। ফলে ক্ষুধা না লাগলেও অনেক বাচ্চা বেশি খায়
4. হাইপোথ্যালামাস এর যে অংশ থেকে ক্ষুধা নিয়ন্ত্রিত হয় সেখানে সমস্যা থাকলে এই সমস্যা হয়।
চিকিৎসাঃকোনো Eating Disorder শতভাগ চিকিৎসা সম্ভব নয়। তবে সহজেই counseling করে তার আচরণগত পরিবর্তন করা যায়। সাধারণত ৩ ভাবে এটি সারানো যেতে পারে। পরিবার এর সাথে কথা বলে তাদের কে খাবার সম্পর্কে ধারণা দেয়া। রোগীকে বুঝিয়ে বলা এবং রোগীর খাবারের পরিমাণকে পরিমিত করে দেয়া।
ক্যালরিঃ এ ধরনের রোগীকে কতটুকু খাবার দিতে হবে তা বের করতে হবে। রোগীর চাহিদা অনুযায়ী খাবার দিতে হবে। তবে যদি রোগী মোটা হয়ে থাকে তবে তাকে কম ক্যালরি দিতে হবে।
শর্করাঃ শর্করার পরিমাণ চাহিদা অনুযায়ী ঠিক থাকবে তবে সে পরিমাণে সিম্পল শর্করা যেমন চিনি, মধু, মিষ্টি ইত্যাদি কম দিতে হবে এবং জটিল শর্করা বেশি দিতে হবে, যেমন শাক সবজি।
আমিষঃ প্রতি কেজি ওজন এর জন্য ১ গ্রাম আমিষ দেয়া যেতে পারে। তবে এক্ষেত্রে ২য় শ্রেণীর আমিষ খেতে উৎসাহিত করতে হবে।
ভিটামিন ও মিনারেলসঃ খাবার বেশি খেলেও সুষম খাদ্যের অভাব হয় এই সময়। তাই ভিটামিন ও মিনারেলস এর অভাব হয়। তাই সাপ্লিমেন্ট এর দরকার পরতে পারে। এনেমিয়া থাকলে আয়রন সাপ্লিমেন্ট দেয়া যায়। প্রচুর পানি খেতে দিতে হবে যাতে পেট ভরা থাকে। সেই সাথে পরিশ্রম করতে হবে।
খাবার যেমন শরীরকে সুস্থ রাখে তেমনই অসুস্থও করে তুলতে পারে। খাবারকে আয়ত্তে রাখা তাই শুধু দরকারই নয়, বরং বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য।