Author Topic: করোনাভাইরাস প্রতিরোধে করণীয় ও পরামর্শ  (Read 84 times)

0 Members and 1 Guest are viewing this topic.

Rasel Ali

  • System Analyst & AD
  • Administrator
  • Jr. Member
  • *****
  • Posts: 82
  • Gender: Male
  • its not over until i get success
    • View Profile
    • Daffodil International University


করোনা বর্তমানে এক আতঙ্কের নাম। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনাভাইরাসকে মহামারি হিসেবে ঘোষণার পর বিভিন্ন দেশ করোনাভাইরাস মোকাবিলার জন্য জরুরি অবস্থা জারি করছে। বিশ্বে করোনার প্রভাব পূর্ববর্তী যেকোনো ভাইরাসের বা মহামারির চেয়ে বেশি ক্ষতিকর এবং মানুষের জীবনের জন্য হুমকিস্বরূপ।

কোভিড–১৯–এর কারণে সারা বিশ্বে এক ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। করোনা এখন বৈশ্বিক সমস্যা। করোনার বিস্তার রোধে আমাদের কিছু বিষয় খুবই গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে সমাজে চলা উচিত—

লকডাউন পলিসি

সরকারকে এখনই জেলাভিত্তিক লকডাউন পলিসি ও আন্তজেলা বাস সার্ভিস সেবা বন্ধ করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। যদিও মাদারীপুরের শিবচর লকডাউন করা হয়েছে, এটি খুবই ভালো সিদ্ধান্ত। অন্য জেলাগুলোয় এ পলিসি নিতে হবে, যেখানে বিদেশফেরত লোকের সংখ্যা ও ঝুঁকি বেশি রয়েছে। চীন লকডাউন পলিসি দিয়ে করোনাকে নিয়ন্ত্রণ করেছে।

সম্প্রতি বিভিন্ন এলাকায় দেখা যাচ্ছে, লোকজন দোকানে বসে আড্ডা দিচ্ছেন। বাজারে ভিড় কমছে না, গণপরিবহন কমছে না। এসবে তো করোনার ঝুঁকি বাড়ায়। তাই লকডাউন পলিসি খুবই কার্যকর হবে। লকডাউনের সময় বেশি বয়স্ক মানুষ এবং ১০ বছরের কম বয়সী শিশুদের বাইরে যেতে দেওয়া যাবে না। চীনের মতো প্রতিদিন প্রত্যেক পরিবার বা বাড়ি থেকে বাইরে যাওয়ার সংখ্যা নির্দিষ্ট করে দেওয়া উচিত। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন দপ্তরের মধ্যে সমন্বয় বেশি দরকার, যাতে যেকোনো সিদ্ধান্ত খুব তাড়াতাড়ি নেওয়া যায়।

প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সুবিধা
চিকিৎসক, নার্স ও স্বেচ্ছাসেবীদের আলাদাভাবে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে করোনা প্রতিরোধ করা সম্ভব। তাদের অতিরিক্ত আর্থিক সুবিধা প্রদান করে করোনা মোকাবিলায় যেন কাজ করতে এগিয়ে আসে। একটি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দিয়ে টিম গঠন করা প্রয়োজন, যেন তারা সহজে আত্মরক্ষার সঙ্গে করোনায় আক্রান্ত রোগীদের সেবা দিতে পারে। সেই সঙ্গে সঙ্গে গাউন, মাস্কসহ অন্যান্য চিকিৎসাসামগ্রী স্বেচ্ছাসেবীদের ও চিকিৎসকদের ফ্রি দিতে হবে। অন্যদিকে, যারা দিন আনে দিন খায়, তাদের করোনা প্রতিরোধের জন্য আর্থিক বরাদ্দ দেওয়া যেতে পারে, যাতে তাঁরা কিছুদিন বাইরে কাজ না করে ঘরে বসে খেতে পারেন। অন্যথায় তাঁরা কাজে বের হলে রাস্তায় জনসমাগম বাড়বে, সেটা করোনার ঝুঁকি ছড়াতে পারে। তাই দৈনিক ভিত্তিতে তিনবেলা খাওয়ার মতো আর্থিক সুবিধা ২০০ বা ৩০০ টাকা প্রদান করা যেতে পারে।

অনলাইন পেমেন্ট

সর্বক্ষেত্রে অনলাইন পেমেন্টের মাধ্যমে টাকা পরিশোধ করার ব্যবস্থা করতে পারলেই করোনার ঝুঁকিই অনেকাংশে কমবে। কারণ ব্যাংক নোটের মাধ্যমে করোনার ঝুঁকি বাড়ে। চীনে সব কেনাকাটা, বিল পরিশোধ ইলেকট্রনিক পেমেন্টে করা হয়েছিল। এটা তাদের করোনা মোকাবিলায় ভালো সাহায্য করেছে। বিশেষজ্ঞ টিমের মাধ্যমে আমরা কোনো উপায় চালু করতে পারলে করোনার বিস্তার রোধ করা সম্ভব। যেমন সবাইকে মোবাইল ব্যাংকিং (বিকাশ, রকেট, নগদ) অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে এবং দোকানদেরকে সেই অনুসারে বিল পরিশোধ করলে টাকার মাধ্যমে করোনার ঝুঁকি কমে যাবে। অন্যদিকে ব্যাংকারদের জরুরি সরঞ্জাম সরবরাহ করার মাধ্যমে করোনা প্রতিরোধে পদক্ষেপ নিতে পারে।

কোয়ারেন্টিন ও আইসোলেশন
কোয়ারেন্টিন ও আইসোলেশন বিষয়ে সরকারের নির্দেশনা প্রত্যেক নাগরিকের মেনে চলা বাঞ্ছনীয়। প্রত্যকের কোয়ারেন্টিনের নিয়ম সম্পর্কে জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। নিজ উদ্যোগে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা অনেক বিদেশফেরত নাগরিক মেনে চলছে না, তাদের কঠোর নির্দেশনার মাধ্যমে কোয়ারেন্টিনে রেখে অন্যদের ঝুঁকি থেকে মুক্ত করা সম্ভব।

পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্নতা

নাগরিকের পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্নতা বিষয়ে অধিকতর সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। যেমন সাবান দিয়ে ২০ সেকেন্ড সময় ধরে হাত ভালোভাবে ধুইয়ে নেওয়া, বাইরে বের হলে হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করা, বাসাবাড়ি, লিফট, সিঁড়ি, সিঁড়ির রেলিং, জামাকাপড়, ঘরের জানালা পরিষ্কার রাখা বাঞ্ছনীয়। প্রতিদিনের ময়লা প্রতিদিন ডাস্টবিনে ফেলে দিতে হবে। পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্নতার জন্য প্রতি অফিসের সামনে হ্যান্ড স্যানিটাইজার বা হ্যান্ডওয়াশ রাখা উচিত। প্রত্যেকেই অফিসে প্রবেশের আগে হাত পরিষ্কার করতে পারে। তাইওয়ান ও হংকং এই পদ্ধতি অনুসরণ করে করোনা প্রতিরোধ করছে। ঘরের ও বাইরের জুতা আলাদা থাকা উচিত। আমরা সবাই নিজের আশপাশের পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখতে সাবধানতা অবলম্বন করি।

ব্যায়াম
প্রতিদিন কমপক্ষে ২৫ থেকে ৩০ মিনিট ব্যায়াম করা উচিত। ব্যায়াম করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। নিয়মিত ডায়েট মেনে চলুন। দুশ্চিন্তা ও ভয় কমিয়ে জীবন এগিয়ে নিতে হবে। ঘরের মধ্যে হেঁটে বা অন্যান্য মাধ্যমে ব্যায়ামের কার্যক্রম করা উচিত, যা দেহের শান্তি ও ভারসাম্য বৃদ্ধিতে কাজ করে। এসবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে।

গুজব ও সচেতন
সমাজে গুজবের শেষ নেই। যেমন থানকুনিপাতার গুজব। আমরা সবাই গুজব পরিত্যাগ করি। সমাজে প্যানিক তৈরি হয়, এমন কাজ না করে সচেতন হই। করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সচেতনতা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমরা সাধারণত ফাস্ট ফুড, কোক, অতিরিক্ত তেলে ভাজা খাবার, রেস্টুরেন্টের খাবার, রাস্তার পাশের হোটেলের খাবার গ্রহণ করি, এখন তা বর্জন করা উচিত।

যারা ধূমপান করে, তাদের সরকারের নির্দেশনা মেনে চলা উচিত। যেকোনো জায়গায় থুতু না ফেলি, হাঁচি–কাশির সময় টিস্যু ব্যবহার করে ডাস্টবিনে ফেলে দিই বা ধ্বংস করি। প্রতিদিন ভিটামিন সি–সমৃদ্ধ লেবু, গাজর, টমেটো, কমলা, সবুজ শাকসবজি খাওয়া উচিত। আসুন আমরা সচেতন হই, অন্যকে সচেতন করতে উৎসাহ দিই।

বিশুদ্ধ পানি পান

এ সময় প্রচুর পরিমাণ বিশুদ্ধ পানি পান করা উচিত। অল্প অল্প করে ১৫ মিনিট পরপর পানি পান করতে হবে। ঠান্ডার সমস্যায় পড়লে হালকা কুসুম গরম পানিতে গড়গড়া করতে হবে। পানির পিপাসা মেটানোর জন্য কখনোই আইসক্রিম বা ঠান্ডা খাওয়া যাবে না। পানির বিকল্প হিসেবে মাঝেমধ্যে ডাবের পানি পান করতে পারেন। ডাবের পানি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে না পারলেও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। প্রয়োজনে বাইরে বের হলে সঙ্গে পানি নিয়ে যেতে পারলে খুবই ভালো।
BR
Rasel Ali