Author Topic: রক্তের বিভিন্ন গ্রুপ ও তাদের প্রয়োজনীয়তা  (Read 381 times)

0 Members and 1 Guest are viewing this topic.

LamiyaJannat

  • Guest
রক্তের গ্রুপিং জানার প্রয়োজনীয়তা যে কত বেশি তা নতুন করে বলার কিছু নেই। ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি অফ ব্লাড ট্রান্সফিউশন অনুযায়ী ৩২ টি গ্রুপিং করা যায়। এর মধ্যে ABO grouping সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। Rh typing, নেগেটিভ বা পজেটিভ ব্লাড গ্রুপ বোঝার জন্যে ABO grouping এর সাথে ব্যবহার হয়।

এখন একটু জেনে নিই ABO grouping টা কী ? আর Rh typing টাই বা কী?
মানুষের শরীরের রক্তের লোহিত কণিকায় দুইটি এন্টিজেন Aও B এর উপস্থিতি বা অনুপস্থিতির উপর ভিত্তি করে মানুষের রক্তের যে গ্রুপিং করা হয়, সেটিই ABO grouping।
রেসাস বানরের শরীরে প্রাপ্ত এন্টিজেনের উপর ভিত্তি করে ( যা পরে মানুষের শরীরেও পাওয়া যায় – Rh factor) মানুষের রক্তের Rh typing করা হয়।
ধরুন আপনার শরীরে A এন্টিজেন আছে। তাহলে আপনার রক্তের গ্রুপ হবে A। তাহলে আপনার রক্তের জলীয় অংশে Anti-B এন্টিবডি থাকবে। আপনার রক্ত যদি B গ্রুপের একজনের শরীরে দেয়া হয় যার রক্তে কিনা Anti-A এন্টিবডি আছে, তবে আপনার A এন্টিজেন সম্পন্ন রক্ত Anti-A এন্টিবডির প্রভাবে বিক্রিয়া করবে, যার ফলে সেই ব্যক্তির শারীরিক অসুবিধা হবে। তাই সাধারণত এক গ্রুপের রক্ত আরেক গ্রুপে দেয়া যায় যায় না।
আবার নেগেটিভ রক্ত পজেটিভ রক্তে দেয়া যায় , কিন্তু পজেটিভ রক্ত নেগেটিভে দেয়া যায় না, কারণ নেগেটিভ রক্ত পজেটিভের বিরুদ্ধে এন্টিবডি তৈরি করতে পারে। অর্থাৎ AB+ve রক্ত হচ্ছে বিশ্বজনীন গ্রহীতা, যাতে কোন ধরনের এন্টিবডি নেই, পজেটিভ ও নেগেটিভ সকল গ্রুপের রক্ত নিতে পারে। কিন্তু 0-ve বিশ্বজনীন দাতা , কারণ একে তো এতে কোন এন্টিজেন নেই তার উপর এটি নেগেটিভ, কেউ তাকে রিজেক্ট করবে না। এখন আসুন জেনে নিই কোন গ্রুপ কাকে দিতে পারবে আর কার কার কাছ থেকে নিতে পারবে।

রক্তের গ্রুপ সম্পর্কে জানার পর নিশ্চয়ই জানতে ইচ্ছে করছে, ভুল গ্রুপের রক্ত দিলে গ্রহীতার কী সমস্যা হবে।
# অস্থির লাগা
# দুশ্চিন্তা
# মাথা ব্যথা
# বুকে ভার ভার লাগা
# জ্বর
# শ্বাসকষ্ট
# গায়ে চুলকানি
# সাদা হয়ে যাওয়া
# ব্লাড প্রেশার কমে যাওয়া
# জন্ডিস
# প্রস্রাব কমে যাওয়া
# কিডনি নষ্ট হওয়া
# এমনকি মৃত্যুও হতে পারে।

এমন হলে আগে রক্ত সঞ্চালন বন্ধ করে চিকিৎসক কে ডাকতে হবে। চিকিৎসক রোগীর বয়স ও শারীরিক অবস্থা অনুযায়ী চিকিৎসা করবেন। আরেকটি ব্যাপারেও অনেকে জানতে আগ্রহী আর তা হলো, মা ও বাবার রক্তের গ্রুপ সন্তানের ব্লাড গ্রুপে কী প্রভাব ফেলে? মা আর বাবার রক্তের গ্রুপ থেকে সন্তানের রক্তের গ্রুপ আলাদাও হতে পারে। এক জন ব্যক্তির ব্লাড গ্রুপ A হলে তার জেনোটাইপ AO, B গ্রুপের হচ্ছে BO, তাহলে বাচ্চা AB, A, B বা O এ চারটির যেকোনো টি হতে পারে। আবার Rh+ve এর জেনোটাইপে +, – বা +,+ দুইটিই থাকতে পারে । একটি পজিটিভ , + ব্লাড গ্রুপ প্রকাশে যথেষ্ট। কিন্তু Rh-ve মানেই হলো -,-. কাজেই দুইজনের – হলে , নিশ্চিত ভাবে – বাচ্চা হলেও, অন্তত একজনের পজিটিভ থাকলে বাচ্চা + বা – দুইটিই হতে পারে। মায়ের নেগেটিভ ব্লাড গ্রুপ, বাবা পজেটিভ হলে, সন্তান যদি পজেটিভ ব্লাড গ্রুপের হয় তখন ২৫% ক্ষেত্রে বাচ্চার মৃত্যু বা শারীরিক সমস্যা হতে পারে। কারণ বাচ্চা ডেলিভারির সময় মায়ের রক্ত সন্তানের রক্তের সংস্পর্শে আসতে পারে। যা মায়ের শরীরে এন্টিবডি সৃষ্টি করে, এই immunization এ সময় লাগে, তাই সাধারণত প্রথম বাচ্চার কোন ক্ষতি হয় না। কিন্তু দ্বিতীয় বাচ্চার শরীরের ক্ষতি হতে পারে। কিন্তু প্রথম থেকেই সতর্ক থাকতে হবে। যাতে sensitization ই না হতে পারে। কাজেই বিয়ের আগেই ভালো করে নিশ্চিত হওয়া উচিত কার কী রক্তের গ্রুপ। পাশাপাশি যাকে বিয়ে করবেন তার শরীরে কোন ইনফেকশন আছে কিনা তাও চেক করে নেয়া উচিত।