Newtec Pharma & Research Center

Human Health Care => Fertility Centre => Topic started by: LamiyaJannat on August 20, 2019, 11:51:15 AM

Title: বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসা ল্যাপারোস্কপি কখন এবং কেন করা হয়?
Post by: LamiyaJannat on August 20, 2019, 11:51:15 AM
বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসা ল্যাপারোস্কপি নিয়ে আমাদের সমাজে নারী-পুরুষেরা খুব কমই ধারণা রাখে। ল্যাপারোস্কপি এক ধরনের সার্জিক্যাল চিকিৎসা পদ্ধতি যার মাধ্যমে পেট কাটা ছাড়াই শুধুমাত্র কয়েকটি ছিদ্র করে ক্যামেরা এবং অন্যান্য যন্ত্রপাতি প্রবেশ করিয়ে সরাসরি রোগ নির্নয় ও অপারেশন করা হয়। এর ফলে অপারেশনের পর রোগী খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হতে পারে। তাই বর্তমানে এটি একটি প্রয়োজনীয় এবং জনপ্রিয় চিকিৎসা পদ্ধতি। প্রশ্ন হলো, বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসা ল্যাপারোস্কপি কখন এবং কেন করা হয়? চলুন জেনে নিই এ নিয়ে বিস্তারিত।

কোন কোন রোগীর ক্ষেত্রে ল্যাপারোস্কপি  করার দরকার হতে পারে?
বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসা ল্যাপারোস্কপি সব রোগীর দরকার হয় না। যারা দীর্ঘদিন ধরে বাচ্চা নেবার চেষ্টা করে যাচ্ছেন এবং বাচ্চা গর্ভধারন না করার তেমন কোন কারণ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না তাদের ক্ষেত্রেই প্রধান ল্যাপারোস্কপি করা হয়।

কী কী সমস্যা ল্যাপারোস্কপির মাধ্যমে নির্ণয় করা যায়?

বন্ধ্যাত্বের কিছু কারণ আছে যা আল্ট্রাসনোগ্রাম এবং অন্যান্য সাধারন পরীক্ষায় ধরা পড়ে না। এই সমস্যাগুলো ল্যাপারোস্কপিতে সরাসরি দৃশ্যমান হয় এবং একই সাথে রোগের চিকিৎসাও সম্ভব। এমন কিছু বন্ধ্যাত্বের কারণ ও চিকিৎসা পদ্ধতি নিচে আলোচনায় তুলে ধরা হল।
১. এন্ডোমেট্রিওসিস
এটি বন্ধ্যাত্বের একটি অন্যতম প্রধান কারণ যা বেশি ভাগ ক্ষেত্রেই  ল্যাপারোস্কপির  মাধ্যমে ডায়াগনোসিস হয়। এই রোগের কারণে জরায়ু এবং এর আশেপাশের অংগপ্রত্যংগ একটির সাথে আরেকটি জোড়া লেগে থাকে এবং নরমাল পজিশন নষ্ট হয়। এই রোগের তীব্রতা এবং পরবর্তী চিকিৎসা পদ্ধতি  নিরূপণের জন্য এটি একটি উপযুক্ত পরীক্ষা।রোগ নির্ণয়ের পাশাপাশি এর্ন্ডোমেত্রি ও টিকসিস্টেক্টমি এবং এডহেসিওলাইসিস করে অংগ-প্রত্যঙ্গের নরমাল এনাটমি ঠিক করা হয়।
২. পি আই ডি বা প্রজনন তন্ত্রের ইনফেকশন
ইনফেকশনের কিছু লক্ষন  প্রজনন তন্ত্র সরাসরি পর্যবেক্ষনের মাধ্যমে ধরা পড়ে যা আলট্রা সাউন্ড এর দ্বারা নির্ণয় সম্ভব নয়।  ইনফেকশনের কারণে ফেলোপিয়ান টিউব বন্ধ হয়ে যেতে পারে যা ল্যাপারোস্কপিক ডাই (রঙ) টেস্ট করে বোঝা যায়।
৩. পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রম( পিসিওএস)
এই সমস্যা শরীরে হরমোনের স্বাভাবিক তারতম্যকে নষ্ট করে ডিম্বস্ফুটন ব্যাহত করে, ফলে আক্রান্তরা গর্ভধারনে অসমর্থ হয়।এই সমস্যায় আক্রান্ত রোগীদের ওষুধ বা ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে ডিম্বস্ফুটন করানো হয়। এই চিকিৎসায় ডিম্বস্ফুটনে ব্যর্থ হলে ল্যাপারোস্কপি করে সিস্ট রাপচার করা হয় যা ওভারিয়ান ড্রিলিং নামে পরিচিত।এই চিকিৎসা পদ্ধতি ওভারি থেকে হরমোনের অস্বাভাবিক নি:সরনকে স্বাভাবিক করে ডিম্বস্ফুটনের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়।
৪. জরায়ুর টিউমার
জরায়ুর ফাইব্রয়েড টিউমারের অবস্থান, সাইজ সরাসরি ল্যাপারোস্কপি করে দেখা যেতে পারে। অভিজ্ঞ সার্জনের দ্বারা  সাবসেরাস ফাইব্রয়েড মায়োমেক্টমি করে  ফেলে দেয়া সম্ভব।
৫. জনন তন্ত্রের জন্মগত ত্রুটি
বিভিন্ন ধরনের ত্রুটি রয়েছে যা বাইরে থেকে পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে বোঝা যায় না। বন্ধ্যাত্বের কারণ খুজতে গিয়ে ল্যাপারোস্কপি করার সময় এই ধরনের সমস্যা ধরা পড়ে।
৬. বন্ধ ফেলোপিয়ান টিউব
বিভিন্ন ইনফেকশনের কারণে বা জন্মগতভাবে ফেলোপিয়ান টিউব বন্ধ থাকতে পারে। ল্যাপারোস্কপিক ডাই টেস্ট করে এটা সঠিকভাবে নির্ণয় করা যায়।

এই পরীক্ষার আগে কোন প্রস্তুতি আছে কি?

এটি একটি ইনভেসিব পরীক্ষা, যা অন্যান্য পরীক্ষার চেয়ে কিছুটা ঝুঁকিপূর্ন ও ব্যায়বহুল। তাই এ পরীক্ষা করার আগে অন্যান্য পরীক্ষা করে দেখে নিতে হয় বন্ধ্যাত্বের কারন হিসেবে আর কোন সমস্যা দায়ী কিনা।  ডিম্বস্ফুটনের প্রমাণ হিসেবে  হরমোনের কিছু পরীক্ষা করা যায়। ফেলোপিয়ান টিউব এবং জরায়ুর ভিতরকার অবস্থা বোঝার জন্য হিস্টারোস্যালফিংগগ্রাম করা হয় এবং হাজবেন্ডের স্পার্ম পরীক্ষা করা হয়। এসব কিছু নরমাল থাকার পরও যখন কোন দম্পতি বাচ্চা কনসিভ করতে ব্যার্থ হয়, তখন করে অন্য  সমস্যা নির্নয়ের জন্য  ল্যাপারোস্কপির পরামর্শ দেয়া হয়।
বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসা ল্যাপারোস্কপি করার খরচ সার্জন এবং প্রতিষ্ঠান ভেদে তারতম্য হয়। রোগীকে এক থেকে দুইদিন হসপিটালে থাকা লাগে। অপারেশন পরবর্তী জটিলতা খুব বেশি নাই বললেই চলে।

Source: https://www.shajgoj.com/laparoscopy-for-infertility/